,

ধেয়ে আসছে প্রবল শক্তি নিয়ে‘বুলবুল’, আতঙ্কিত উপকূলে নদী তীরের মানুষ

বাগেরহাট: প্রবল শক্তি নিয়ে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় বুলবুল উপকূলে আঘাত হানবেআজ সন্ধ্যা বা তার কিছু পরে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে পায়রা ও মংলা সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে আতঙ্ক বিরাজ করছে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ,শরণখোলা উপজেলার মংলা সমুদ্র বন্দর নদী তীরের বাসিন্দাদের মধ্যে।

২০০৭ এর ১৫ নভেম্বর প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় সিডরের ভয়াবহতা আজও এ অঞ্চলের লোকজনকে আতঙ্কিত করে। ঝড় জলোচ্ছ্বাসে সব থেকে আতঙ্কে থাকে এ অঞ্চলের নদী তীরের মানুষ।

শনিবার (০৯ নভেম্বর) দুপুর দুইটা পর্যন্ত কোনো আশ্রয় কেন্দ্রে লোকজন না পৌঁছালেও সন্ধ্যা নাগাত নদী তীরের লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়,  ২৩৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগে কোথাও বড় ধরনের সমস্যা হলে তাৎক্ষণিকভাবে খবর নেয়ার জন্য জেলায় ১০টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এছাড়াও  ১০৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২৮২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ,৬টি, মহাবিদ্যালয় ,মাদ্রাসা ২৪৫টিখোলা রাখা হয়েছে।

বুলবুলের ক্ষতি মোকাবিলায় প্রশাসন জনগণকে সচেতন করতে সার্বক্ষণিক মাইকিং করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এছাড়াও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা মাইকিং করে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য তাগিদ দিচ্ছেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামরুল ইসলাম  বলেন, বুলবুল মোকাবিলায় সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) সব কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছেন। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে ৩০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি খাবারের আরও প্যাকেট তৈরির ব্যবস্থা চলছে। দুর্যোগের সময় চিড়া যেহেতু বেশি প্রয়োজন হয়, তাই আমরা বাজারে কয়েকটি চিরা কলকে তৈরি রেখেছি যাতে প্রয়োজন হলে তারা আমাদের চিড়া সরবরাহ করতে পারেন। জেলায় ২৩৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগে কোথাও বড় ধরনের সমস্যা হলে তাৎক্ষণিকভাবে খবর নেয়ার জন্য জেলায় ১০টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জনসাধারণকে সচেতন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, উপজেলা ও প্রশাসন ও  জেলা প্রশাসনের একাধিক টিম দুর্যোগের অধিক ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলা শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলাতে অবস্থান করছে। নদী তীরের লোকজনকে দুপুরের আগেই আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়া জন্য অনুরোধ করেছেন। এদিকে মহাবিপদ সংকেত জারি হলেও এখনো সব জায়গায় তিনটির মধ্যে বিপদ সংকেতের একটি পতাকা উড়তে দেখা যায়। এতে করে জনসাধারণের মধ্যে নানা রকম ভিভ্রান্তের সৃষ্টি হচ্ছে। সাধারণ লোকজন বুঝতে পারছেনা আসলেই কত নম্বর বিপদ সংকেত চলছে।

এদিকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের পর সকল প্রস্তুতি নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে পশুর চ্যানেলে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। রাত থেকে পণ্য ওঠানামা ও জাহাজ আগমন নির্গমন বন্ধ রয়েছে। বন্দরের উদ্ধারকারী জাহাজ এম টি ‘সুন্দরবন’, এম টি শিপসা ও এমটি অগ্নিপ্রহরী এবং কোষ্টগার্ডের সিজিএস কামরুজ্জামান, মুনসুর আলী, স্বাধীন বাংলা, সোনার বাংলা ও অপারেজয় বাংলা নামে পাঁচটি উদ্ধারকারী জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে উদ্ধার তৎপরতার জন্য।

এই বিভাগের আরও খবর